ত্বকের যত্ন, বিউটি টিপস

টিনেজ ত্বককে ব্রণমুক্ত ও ফ্রেশ রাখতে কোন ফেস মাস্ক বেছে নেবেন?

টিনেজ ত্বককে ব্রণমুক্ত ও ফ্রেশ রাখতে কোন ফেস মাস্ক বেছে নেবেন?

টিনেজে ত্বকের যত্নে কোন ফেইস মাস্কগুলো চুজ করবেন ?

বয়ঃসন্ধিকাল এমন একটি সময় যখন শুধু শারীরিক পরিবর্তনই নয়, মানসিক পরিবর্তনও আসে। ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে এই সময়ে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এই বয়সেই প্রথম পিম্পলস, ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস দেখা দেয়, পোরস ভিজিবল হয়ে ওঠে। স্কুল, কলেজ, বন্ধু-বান্ধবের সাথে সামাজিকতা, পরীক্ষার চাপ, হরমোনাল ইমব্যালেন্স—সব মিলিয়ে এই সময়ে ত্বক খুব সহজেই সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। তাই এই সময়ের জন্য দরকার সঠিক স্কিনকেয়ার এবং বিশেষ করে এমন কিছু ফেইস মাস্ক যা স্কিনকে বাড়তি কেয়ার দেবে।

আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো টিনেজারদের জন্য উপযোগী কিছু ফেইস মাস্ক, যেগুলো উইকলি রুটিনে যুক্ত করলে ত্বক থাকবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, পরিষ্কার ও ফ্রেশ।

টিনেজে ত্বকের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন কেন ?

টিনেজে ত্বক ম্যাচিউর ত্বকের তুলনায় আলাদা। কারণ:

  • হরমোনাল পরিবর্তন: এই সময় সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ডগুলো বেশি সেবাম উৎপন্ন করে।
  • একনে প্রবণতা: ত্বকের পোরস সহজেই ব্লক হয়ে একনে দেখা দেয়।
  • সেনসিটিভ ত্বক: টিনেজ স্কিনে হার্শ কেমিক্যাল সহজেই ক্ষতি করতে পারে।

এই কারণেই খুব হার্শ প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে, বেসিক স্কিনকেয়ারের সাথে কিছু ন্যাচারাল ফেইস মাস্ক যুক্ত করা যেতে পারে। তবে মাস্ক বাছাই করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন উপাদানগুলো স্কিনের জন্য কোমল হয় এবং কোনো ইরিটেশন না হয়।

টিনেজারদের জন্য বেস্ট কিছু ফেইস মাস্ক

১. স্ট্রবেরি ফেইস মাস্ক – উজ্জ্বলতা ও প্লাম্পিনেসের জন্য

স্ট্রবেরি শুধু সুস্বাদু ফল নয়, এতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ। এটি ত্বকের ডালভাব দূর করে ত্বককে করে তোলে উজ্জ্বল ও প্লাম্পি।

যা যা লাগবে:

  • ২ চামচ ম্যাশ করা স্ট্রবেরি
  • ১ টেবিল চামচ টক দই

ব্যবহার পদ্ধতি:
উপাদান দুটি ভালোভাবে মিশিয়ে ফেসে অ্যাপ্লাই করুন। ১৫–২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক থেকে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।

২. রোজ পেটাল ফেইস মাস্ক – ইনস্ট্যান্ট গ্লো ও অয়েল কন্ট্রোল

গোলাপের পাপড়ি প্রাচীনকাল থেকেই সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে আছে ন্যাচারাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের স্পটস কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকে গ্লো আনে।

যা যা লাগবে:

  • ২ চামচ রোজ পেটাল পাউডার
  • ½ চা চামচ মধু
  • ১ টেবিল চামচ টক দই

ব্যবহার পদ্ধতি:
উপকরণগুলো মিশিয়ে ফেইসে লাগান। ১০–১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন।

৩. বানানা ফেইস মাস্ক – ময়েশ্চার ও স্মুথনেসের জন্য

কলা ত্বকের জন্য ভিটামিন বি৬, পটাশিয়ামসহ অনেক দরকারি নিউট্রিয়েন্ট সরবরাহ করে। এটি ত্বককে হেলদি ও ফ্ললেস রাখতে সাহায্য করে।

যা যা লাগবে:

  • আধা পাকা কলা
  • ১ চা চামচ মধু
  • ২ টেবিল চামচ দুধ

ব্যবহার পদ্ধতি:
উপকরণগুলো ম্যাশ করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ১০–১৫ মিনিট ফেসে রেখে ধুয়ে ফেলুন। স্কিন সাথে সাথেই স্মুথ হবে।

৪. উপটান – সানট্যান রিমুভ ও ব্রাইট লুকের জন্য

উপটান স্কিনকে ন্যাচারাল গ্লো এবং উজ্জ্বলতা আনে। সানট্যান দূর করে, বিশেষ দিনে ব্যবহার করলে দারুণ ফল পাওয়া যায়।

যা যা লাগবে:

  • ২ চা চামচ উপটান
  • ১ চা চামচ টক দই
  • ১ টেবিল চামচ রোজ ওয়াটার

ব্যবহার পদ্ধতি:
মিশ্রণটি ফেইসে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে ত্বকে ব্রাইটনেস আসবে।

৫. শসার হাইড্রেটিং ফেইস মাস্ক – অয়েল কন্ট্রোল ও একনে প্রতিরোধে

শসা প্রাকৃতিকভাবে ত্বকে হাইড্রেশন দেয় এবং একনের ইনফ্ল্যামেশন কমায়। অয়েলি ও একনে-প্রন স্কিনের জন্য দারুণ একটি অপশন।

যা যা লাগবে:

  • ১ টেবিল চামচ শসার রস
  • ১ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল
  • সামান্য মধু

ব্যবহার পদ্ধতি:
উপকরণগুলো মিশিয়ে ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। ২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক হবে ফ্রেশ ও হাইড্রেটেড।

হোমমেড ফেইস মাস্ক ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম

১. সবসময় ফ্রেশ উপাদান ব্যবহার করুন, ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করবেন না।
২. মাস্ক ব্যবহার করার আগে স্কিন ভালোভাবে ক্লিন করে নিন।
৩. চালের গুঁড়ো, বেকিং সোডা, কফির মতো হার্শ উপাদান ব্যবহার করবেন না।
৪. লেবু, মাল্টার মতো অ্যাসিডিক উপাদান সরাসরি ফেসে ব্যবহার করবেন না।
৫. আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার অবশ্যই ব্যবহার করুন।
৬. উইকে ১–২ বারের বেশি মাস্ক ব্যবহার করার দরকার নেই।

অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট কোথায় পাবেন

ফেইস মাস্ক তৈরি করার অনেক উপাদান ঘরেই পাওয়া যায়, কিন্তু অনেক সময় আমাদের ভালো মানের রেডি-মেড প্রোডাক্ট প্রয়োজন হয়। তখন অবশ্যই অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে হবে।

কোথায় পাবেন?
আপনি নিশ্চিন্তে অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন moreshopbd বা moreshopbd.com থেকে। এখানে পাবেন আসল ও মানসম্মত স্কিনকেয়ার পণ্য যা টিনেজ স্কিনের জন্য নিরাপদ।

টিনেজ ত্বকের যত্ন নেওয়া মানেই অনেক বেশি প্রোডাক্ট ব্যবহার করা নয়। বেসিক স্কিনকেয়ারের সাথে সপ্তাহে এক বা দুইবার ফ্রেশ ফেইস মাস্ক ব্যবহার করলেই ত্বক থাকবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। তবে মনে রাখবেন, যেকোনো প্রোডাক্ট বা মাস্ক ব্যবহারের আগে স্কিন টাইপ অনুযায়ী বেছে নিতে হবে।

টিনেজ থেকেই সঠিক যত্ন শুরু করলে ভবিষ্যতে ত্বকের সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব। তাই নিয়মিত রুটিন মেনে চলুন, প্রয়োজন হলে ডার্মাটোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করুন এবং অথেনটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *