নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করেও কেন কমছে না সানট্যান আর ডার্ক স্পট?

নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করেও সানট্যান আর ডার্ক স্পট কমছে না? জানুন কারণ ও সমাধান
ভূমিকা
আমরা জানি, দিনের বেলায় ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। বাইরে বের হলে ইউভি রে ত্বকের গভীরে গিয়ে ক্ষতি করে—স্কিনে ট্যান পড়ে, ডার্ক স্পট তৈরি হয়, বলিরেখা দেখা দেয় এমনকি ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যেতে শুরু করে।
অনেকে নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন, তবুও দেখেন ফেইস কালো হয়ে যাচ্ছে, ডার্ক স্পটস বা সানট্যান থেকে যাচ্ছে। তখনই প্রশ্ন আসে—
“সানস্ক্রিন ব্যবহার করেও কেন এই সমস্যা হচ্ছে?”
এটার উত্তর খুঁজতে হলে বুঝতে হবে সানস্ক্রিনের কার্যকারিতা, সঠিক ব্যবহারের নিয়ম এবং যে ভুলগুলো আমরা অজান্তেই করে যাই।
সানস্ক্রিন আসলে কীভাবে কাজ করে?
সানস্ক্রিনের মূল কাজ হলো সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের গভীরে ঢুকতে না দেওয়া।
- UVA রশ্মি: ত্বকের গভীরে গিয়ে কোষের ক্ষতি করে এবং দ্রুত বয়স বাড়ার মতো চিহ্ন (aging sign) তৈরি করে।
- UVB রশ্মি: ত্বকের উপরিভাগে জ্বালা, রোদে পোড়া বা সানবার্ন তৈরি করে।
একটি ভালো সানস্ক্রিন এই দুই ধরনের রশ্মি থেকেই ত্বককে রক্ষা করে। SPF (Sun Protection Factor) মূলত UVB রশ্মি থেকে কতটা সুরক্ষা দিচ্ছে তা বোঝায়, আর PA+++ বা Broad Spectrum লেখা থাকলে বোঝা যায় UVA থেকেও প্রোটেকশন দিচ্ছে।
কেন সানস্ক্রিন ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না?
আপনি হয়তো সানস্ক্রিন ব্যবহার করছেন, কিন্তু সঠিক পরিমাণে, সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া সম্ভব না।
নিচে দেওয়া হলো সবচেয়ে কমন ৫টি ভুল যা অনেকেই করেন, আর সেই ভুলগুলো কীভাবে ঠিক করবেন তাও বিস্তারিত জানানো হলো।
১) যথেষ্ট পরিমাণে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করা
অনেকেই মাত্র অল্প একটু সানস্ক্রিন মুখে লাগান, যেন মেকআপের বেস হিসেবেও চলে। অথচ গবেষণা বলছে, পুরো মুখ ও গলার জন্য কমপক্ষে দুই আঙুল সমান পরিমাণ সানস্ক্রিন প্রয়োজন।
কম পরিমাণে ব্যবহার করলে ত্বকে পুরো কভারেজ তৈরি হয় না এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের ভেতরে ঢুকে পড়ে।
সমাধান:
- প্রতিবার বাইরে বের হওয়ার ২০-৩০ মিনিট আগে দুই আঙুল পরিমাণ সানস্ক্রিন নিন।
- আঙুলের ডগায় আলতোভাবে প্যাডিং করে মুখে লাগান।
- হাতের তালুতে নিয়ে ঘষে লাগাবেন না, এতে প্রোডাক্টের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।
২) সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই না করা
একবার সানস্ক্রিন লাগালেই সারাদিন কাজ হবে—এমনটা ভেবে নিলে ভুল হবে। ঘাম, ধুলো, ঘর্ষণ—সবকিছু মিলিয়ে সানস্ক্রিনের প্রোটেকশন ধীরে ধীরে কমে যায়।
সমাধান:
- প্রতি ২–৩ ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই করুন।
- বাইরে গেলে ছোট সাইজের সানস্ক্রিন ব্যাগে রাখুন।
- মেকআপ করা থাকলে SPF যুক্ত কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করে অন্তত কিছুটা রিফ্রেশ প্রোটেকশন দিতে পারেন।
৩) ফেইস গ্রিজি হয়ে যাওয়া নিয়ে টেনশন করা
অনেকেই মনে করেন সানস্ক্রিন মানেই চিটচিটে ফেইস। তাই খুব অল্প ব্যবহার করেন বা ব্যবহারই বন্ধ করে দেন। কিন্তু বর্তমানে বাজারে অয়েল-ফ্রি ও ম্যাট ফিনিশ সানস্ক্রিন পাওয়া যায়, যেগুলো ত্বকে কোনো গ্রিজিনেস ছাড়াই পূর্ণ সুরক্ষা দেয়।
সমাধান:
- আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী সঠিক সানস্ক্রিন নির্বাচন করুন।
- অয়েলি স্কিন হলে “Oil-free” বা “Gel-based” সানস্ক্রিন বেছে নিন।
- ড্রাই স্কিন হলে “Moisturizing” সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
৪) এক্সপায়ার্ড প্রোডাক্ট ব্যবহার করা
অনেকেই জানেন না সানস্ক্রিনের একটি মেয়াদ থাকে। এক্সপায়ার হওয়ার পর সানস্ক্রিনের SPF ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, ফলে কোনো সুরক্ষা দেয় না বরং ত্বকে রিঅ্যাকশন হতে পারে।
সমাধান:
- প্যাকেটের গায়ে লেখা Manufacturing Date এবং Expiry Date ভালো করে দেখে নিন।
- খুলে ফেলার পর সাধারণত ৬–১২ মাসের মধ্যে ব্যবহার শেষ করা উচিত।
- কালার, গন্ধ বা টেক্সচারে পরিবর্তন দেখলে সেটি ব্যবহার করবেন না।
৫) শুধুমাত্র SPF যুক্ত মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করা
BB Cream বা মিনারেল পাউডারে SPF লেখা থাকলেও সেটি একা যথেষ্ট নয়। কারণ এগুলো ত্বকে যে পরিমাণে বসানো হয়, তা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
সমাধান:
- মেকআপের আগে অবশ্যই আলাদা করে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- মেকআপের পরে যদি রিঅ্যাপ্লাই দরকার হয়, তখন SPF যুক্ত কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।
- কখনোই শুধু BB Cream বা SPF যুক্ত ফাউন্ডেশনকে সানস্ক্রিনের বিকল্প ভাববেন না।
সানস্ক্রিন সঠিকভাবে ব্যবহার করলে কী বেনিফিট পাবেন?
- সানবার্ন, সানট্যান থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়।
- ডার্ক স্পট, পিগমেন্টেশন কমতে থাকে।
- ত্বকের ইলাস্টিসিটি ধরে রাখে এবং বলিরেখা দেরিতে আসে।
- ত্বক দীর্ঘসময় হেলদি ও ইয়ুথফুল থাকে।
- মেকআপ ত্বকে সুন্দরভাবে সেট হয়।
কোন ধরনের সানস্ক্রিন বেছে নেবেন?
Broad Spectrum সানস্ক্রিন
যাতে UVA এবং UVB—দুই ধরনের রশ্মির বিরুদ্ধেই সুরক্ষা থাকে।
প্যাকেটে যদি SPF ৩০ বা তার বেশি এবং PA+++ লেখা থাকে, সেটি নিরাপদ পছন্দ।
Chemical vs Physical সানস্ক্রিন
- Physical (Mineral) Sunscreen: যাদের সেনসিটিভ স্কিন, তাদের জন্য ভালো। সাধারণত জিঙ্ক অক্সাইড বা টাইটানিয়াম ডাই অক্সাইড থাকে।
- Chemical Sunscreen: লাইটওয়েট এবং অয়েলি স্কিনের জন্য ভালো। সাধারণত অক্টিনক্সেট, অ্যাভোবেঞ্জোন ইত্যাদি থাকে।
অথেনটিক সানস্ক্রিন কোথায় পাবেন?
বাজারে অনেক ভেজাল বা মেয়াদোত্তীর্ণ সানস্ক্রিনও বিক্রি হয়। তাই অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে গেলে সবসময় ট্রাস্টেড সোর্স থেকে কিনুন।
আপনি moreshopbd বা moreshopbd.com থেকে আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী ডার্মাটোলজিস্ট-রিকমেন্ডেড সানস্ক্রিন কিনতে পারেন।
এখানে পাবেন—
- ১০০% অরিজিনাল প্রোডাক্ট
- সঠিক গাইডলাইন ও কাস্টমার সাপোর্ট
- নিরাপদ ডেলিভারি সার্ভিস
ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচাতে সানস্ক্রিনের বিকল্প নেই। তবে নিয়মিত ব্যবহার করলেও যদি ফল না পান, তাহলে আজকের এই ৫টি কমন মিসটেক আবার যাচাই করে দেখুন।
সঠিক পরিমাণে, সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে আপনি পাবেন—
- সানট্যানমুক্ত, উজ্জ্বল ত্বক
- ডার্ক স্পটস ও পিগমেন্টেশনমুক্ত হেলদি স্কিন
- দীর্ঘসময় ধরে ইয়ুথফুল লুক
তাই আজ থেকেই সঠিকভাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার শুরু করুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনার ব্যবহৃত প্রোডাক্ট অথেনটিক, যেমন moreshopbd বা moreshopbd.com থেকে সংগ্রহ করা যায়।
আপনার ত্বকই আপনার আত্মবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি—তাই যত্নে কোনো কমতি রাখবেন না।